কান্তজীঊ মন্দির দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলাধীন ঢেপা নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশের মন্দিরগুলোর মধ্যে সুন্দরতম এবং গাত্রময় পোড়ামাটি অলঙ্করনে ভরা একমাত্র মন্দির স্থাপত্য। জনশ্রুতি আছে যে, কান্তজীঊ মন্দির ১৭০৪ খৃস্টাব্দে দিনাজপুর রাজবংশের রাজা প্রাণনাথ নির্মাণ করতে শুরু করেন। মন্দিরের উত্তর পূর্ব কোণায় ভিত্তি ভূমিতে লাগানো শিলালিপি অনুযায়ী এর নির্মাণ শেষ হয় ১৭৫২ খৃস্টাব্দে। কান্তজীঊ মন্দিরটি নবরত্ন মন্দির স্থাপত্য রীতির অন্তর্গত ও নয়টি শিখর সম্বলিত পাথরের ভিত্তি মূলের উত্তরে ইটে নির্মিত মন্দিরটি। পিরামিড আকৃতির ধাপ বিশিষ্ট বর্গাকার তিনতলা ইমারত। ১ম উপর চার কোণে চারটি ২য় তলায় চারকোণে চারটি ও ৩য় তলার মধ্যে কুটুরীর মাঝে একটি মোট নয়টি শিখর বা রত্ন সম্বলিত ছিল বলেই একটি সররত্ন মন্দির নামে অভিহিত।
১৮৯৭ সনে ভূমিকম্পে সব কয়টি শিখরই ধ্বংস হয়ে যায়। সম্পূর্ণ ইমারতটি দৃশ্যত একটি রথ বিশেষ। পোড়ামাটির ফুলকে মূলত: হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতের কাহিনী ভগবান কৃষ্ণের রাশ মন্ডল সহ তার সখী রাধার কেলী বা রসরঙ্গ। হিন্দু পূরাণের দেবদেবীবৃন্দ, সমকালীন জীবনলেখ্য, গোলাপ ও অন্যান্য ফুল স্থান পেয়েছে। মন্দির গাত্রের বিভিন্ন ছবি থেকে মোগল আমলের পোষাক পরিচ্ছদ, পরিবহণ ব্যবস্থা সহ তখনকার স্বচ্ছ জীবনালেখ্য খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতি বছরে কার্তিক মাসের পূর্ণমা রাত্রে এখানে বেশ জাকজমকের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায় রাসযাত্রা অনুশীলন পালন করে। এ সময়ে প্রধান মন্দির থেকে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ এখানে সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এক বিরাট মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু ভক্তবৃন্দ সমবেত হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS